বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২০ পূর্বাহ্ন
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি॥ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামান্দেরআক গ্রামে এক সন্তানের জননী টুম্পা (৪০) তার আত্মহত্যার জন্য স্বামী, ভাসুর ও জাকে অভিযুক্ত করেছেন। আত্মহত্যার পূর্বে অভিযুক্তদের নাম দুই পায়ে লিখে রাখে টুম্পা।
এ ঘটনায় বুধবার রাতে টুম্পার বোন কল্পনা অধিকারী বাদী হয়ে টুম্পার স্বামী স্বপন মন্ডল, ভাসুর বিবেক মন্ডল ও জা রীতা রানী মন্ডলকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই স্বপনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বপনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
স্বপন মাদারীপুর জেলার ডাসার থানার নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মৃত বঙ্কিম মন্ডলের ছেলে। শ্বশুবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে টুম্পা তার স্বামীকে নিয়ে পিতার বাড়িতেই থাকতো।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, ১১ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে টুম্পার সাথে স্বপনের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে স্বামী, ভাসুর ও জা’এর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কারণে ৭/৮বছর আগে টুম্পা স্বামীকে নিয়ে পিতার বাড়িতে চলে আসে। টুম্পা ও স্বপন শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। তাদের সংসারে ৮ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে।
জমিজমা ও পারিবারিক সমস্যা সমাধানের জন্য ৮ জুন সকালে টুম্পা তার শ্বশুরবাড়ি মাদারীপুরের নবগ্রাম এলাকায় গেলে ভাসুর বিবেক মন্ডল ও জা রীতা রানী মন্ডল অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও মানষিক নির্যাতন চালিয়ে টুম্পাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। স্বামী, ভাসুর ও জা এর নির্যাতন সইতে না পেরে মঙ্গলবার রাতেই টুম্পা পিতার ঘরে এসে বিষপান করেন।
বুধবার সকালে খবর পেয়ে পুলিশ টুম্পার মরদেহ খাটের উপর থেকে উদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
ওসি আরো জানান, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় এক নম্বর আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকী আসামীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মিশু জানান, টুম্পার সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করার সময় হাটুর উপরের অংশে কলম দিয়ে তার মৃত্যুর কারন ও মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তি স্বামী স্বপন মন্ডল, ভাসুর বিবেক মন্ডল ও বিবেকের স্ত্রী রীতা মন্ডলের নাম লিখে রেখে যায়। এছাড়াও তার মায়ের শশ্মনের কাছে সৎকার করার আকুতি জানায় টুম্পা তার লেখায়।
Leave a Reply